আমাদের দৈনন্দিন জীবনে, রুটি, পরোটা, লুচি থেকে শুরু করে অনেক ধরণের খাবারে বেসন, ময়দা এবং আটা ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে, বাঙালিদের প্রিয় লুচির মূল উপাদান হল ময়দা। বেসন অনেক ধরণের ভাজা চপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ময়দা দৈনন্দিন জীবনেও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু স্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনটি বেশি উপকারী এবং কোনটি ক্ষতিকর? জানেন কি?
গমের আটা – আটা সাধারণত আস্ত গম পিষে তৈরি করা হয়। এতে গমের ভুসি, অঙ্কুর এবং এন্ডোস্পার্ম থাকে। এটি ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়। এটি রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে কারণ এর গ্লাইসেমিক সূচক কম থাকে। এতে আয়রন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি রয়েছে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
তবে এর কিছু ক্ষতিকারক প্রভাবও রয়েছে। অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে কার্বোহাইড্রেটের কারণে ওজন বাড়তে পারে। যাদের গ্লুটেনের প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে।
ময়দা – গম থেকে ময়দা তৈরি করা হয়, কিন্তু প্রক্রিয়াকরণের সময় এর ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ দূর হয়। কেবল স্টার্চ থাকে। হালকা এবং নরম খাবার তৈরিতে ময়দা কার্যকর। এটি লুচি, পরোটা, কেক, বিস্কুট ইত্যাদি তৈরির জন্যও ভালো। যদিও এটি হজম করা সহজ, এটি দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। ফাইবারের অভাব কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়ায়। এটি দ্রুত রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এর পুষ্টিগুণ খুব কম, অন্যদিকে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি। দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে স্থূলতা এবং কোলেস্টেরলের সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন : আস্ত মৌরি এবং মৌরি ভেজানো জলের মধ্যে কোন টি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভাল, জানুন
ছোলার ময়দা বা বেসন– শুকনো ছোলা পিষে তৈরি করা হয়। প্রোটিন সমৃদ্ধ, নিরামিষাশীদের জন্য প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। এতে ফাইবার বেশি এবং হজমে সহায়তা করে, তবে কার্বোহাইড্রেটের মান খুব কম, তবুও এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। এতে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো উপকারী খনিজ পদার্থ রয়েছে।
তবে, কেবল বেসনের কারণে অতিরিক্ত ভাজা খাবার খাওয়া ভালো ধারণা নয়। যাদের গ্যাস বা অ্যালার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্য মসুর ডালের মতো খাবার অস্বস্তিকর হতে পারে।
Disclaimer: এই নিবন্ধে উল্লিখিত পদ্ধতি এবং পরামর্শগুলি সাধারণ স্বাস্থ্য জ্ঞানের ভিত্তিতে লেখা, এটি অনুসরণ করার আগে একজন ডাক্তার বা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।